১. বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া, নেটওয়েস্ট সিরিজ, কার্ডিফ, ১৮ই জুন, ২০০৫

ফলাফলঃ বাংলাদেশ ০৫ ইউকেটে জয়ী
ওয়ানডে র্যাংকিং এর সবচেয়ে নিচে অবস্থানকারী দল বাংলাদেশ তৎকালীন বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে শক্তিশালী একাদশকে চেপে ধরেছিল। অস্ট্রেলিয়ার সাথে ম্যাচের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ ১০৭ টি ওয়ানডের মধ্যে মাত্র ০৯ টিতে জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল। প্রথম খেলায় ইংল্যান্ডের কাছে বিশাল ব্যাবধানে পরাজিত হয়েও বাংলাদেশ বিশ্বের এক নাম্বার ব্যাটিং লাইন আপকে মাত্র ২৪৯ রানে সীমাবদ্ধ রাখতে সমর্থ হয়েছিল। পরে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে ভর করে মাত্র ০৫ উইকেট হারিয়ে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়, কার্ডিফে রচিত হয় এক নতুন ইতিহাস। বিরোচিত ১০০ রান করে জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখায় মোহাম্মদ আশরাফুলকে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত করা হয়েছিল।
২. কেনিয়া বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বিশ্বকাপ, পুনে, ২৯ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৬

ফলাফলঃ কেনিয়া ৭৩ রানে জয়ী
১৯৯৬ সালে কেনিয়া যখন বিশ্বকাপের লিগ পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছিল, তখনও পর্যন্ত কেউ প্রত্যাশা করেনি কেনিয়া প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হবে। কিন্তু না! কেনিয়া পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭৩ রানে হারিয়ে বিশাল জয় তুলে নেয়। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ে ১৬৬ রান সংগ্রহ করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৯৩ রানে অল-আউট হয়ে যায়। কেবলমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজের দু’জন ব্যাটসম্যানই দুই অংকের রান করতে পেরেছিল যাকে ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় বলে অভিহিত করা হয়েছিল। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের মরিস ওদুম্বে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছিলেন।
৩. ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ,বিশ্বকাপ ফাইনাল, লর্ডস, ২৫ই জুন, ১৯৮৩

ফলাফলঃ ভারত ৪৩ রানে জয়ী
ওয়ানডেতে প্রথম নয় বছরে মাত্র ১৭ টি জয় নেয়া ভারতকে বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলায় যথেষ্ট ভাগ্যবান বলে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু তাই বলে বোলিং-ব্যটিং এবং অন্য সব কিছু বিবেচনায় শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে দাঁড়াতে পারে এমন কোনও সম্ভবনাই ছিল না। ব্যাট করতে নেমে ভারত যখন মাত্র ১৮৩ রানে গুটিয়ে যায়, তখন কেউই কল্পনা করতে পারেনি কি হতে চলেছে। এরপরে ভারতের সম্মিলিত বোলিং-ফিল্ডিং আক্রমনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস মাত্র ১৪০ রানে থামিয়ে ৪৩ রানে জয় নিশ্চিত করে। খেলায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন মহিন্দর অমরনাথ।
৪. জিম্বাবুয়ে বনাম অস্ট্রেলিয়া, বিশ্বকাপ, ট্রেন্ট ব্রিজ, ০৯ই জুন, ১৯৮৩

ফলাফলঃ জিম্বাবুয়ে ১৩ রানে জয়ী
এমন একজন ব্যক্তি যদি থাকেন যিনি বাংলাদেশের কার্ডিফের অবিশ্বাস্য জয়ের পরে কী অনুভূত হয়েছিল বুঝতে পারেন তিনি হলেন একমাত্র ডানকান ফ্লেচার ! ১৯৮৩ সালে ট্রেন্ট ব্রিজের বিশ্বকাপ ফ্লেচারের জিম্বাবুয়ে তাদের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে, বিশ্বকাপের প্রথম খেলায় অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে পুরো বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছিল। যেই মুহূর্তে জিম্বাবুয়ের ইনিংসটি ধস নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে ঠিক তখনি ফ্লেচার মাঠে প্রবেশ করেন এবং ৬৯ রান করে দলকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান। । জবাবে অস্ট্রেলিয়া কোন উইকেট না হারিয়ে ৬১ রান দিয়ে শুভ সূচনা করে। কিন্তু ঠিক সেই সময়ে আবার ফ্লেচার ফিরে এসে অস্ট্রেলিয়ান চারটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার করেন। যার উপর ভিত্তি করে রচিত হয় সেই ঐতিহাসিক জয়! অসামান্য অবদানের জন্য ডানকান ফ্লেচার ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের অন্যতম ব্যাটসম্যন তামিম ইকবাল সম্পর্কে জানতে দেখুনঃ নির্ভরতার আরেক নাম তামিম ইকবাল
৫. বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান, বিশ্বকাপ, নর্থহ্যাম্পটন, ৩১ই মে, ১৯৯৯

ফলাফলঃ বাংলাদেশ ৫২ রানে জয়ী
খালেদ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইতিপূর্বে কোনও টেস্ট খেলা দেশকে পরাজিত করতে পারেনি। বাস্তবে তারা খুব কমই প্রতিরোধ তৈরি পারত কিন্তু ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিস, শোয়েব আখতার এবং সাকলাইন মুশতাকের মতো খেলোয়াড়ের সমন্বয়ে গঠিত দুর্দান্ত বোলিং লাইনআপের বিরুদ্ধে তারা সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বাংলাদেশ প্রথম ব্যাট করতে নেমে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে ২২৩ রানের প্রতিযোগিতামূলক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পাকিস্তান ৪৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে যায়! অবশেষে খালেদ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন বোলিং আক্রমণ বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করে। জয়ের ধারায় ফিরিয়ে আনায় খালেদ মাহমুদ ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন।