২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১১ সেপ্টেম্বর হামলার পর ন্যাটো তালেবানকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ এবং একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সৃষ্টির লক্ষ্যে আফগানিস্তান আক্রমণ করে। এর প্রায় ২০ বছর পরে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করল।
তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে ৫০ কিলোমিটার উওরে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ বাগরাম বিমানঘাঁটিও দখল করে নিয়েছে যা গত ২০ বছর ধরে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিদেশী সেনাদের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।বাগরাম ঘাঁটিতে ৫ হাজার যোদ্ধা বন্দি ছিল যাদের এটি দখলের পর মুক্তি দেয়া হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, তালেবান যোদ্ধারা ঊর্ধ্বতন নেতাদের নির্দেশনা মেনে রাজধানীর সকল প্রবেশ পথ দখলে নেন। তালেবান নেতারা বলেন, শক্তি প্রয়োগ করে তারা রাজধানী শহর দখল করতে ইচ্ছুক নন। বিমানবন্দর, হাসপাতাল, ব্যাংক-বীমা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজকর্ম চলমান থাকবে এবং কোন জরুরি সরবরাহ কাজেও বাধা দেওয়া হবে না। বিদেশীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, চাইলে তারা চলে যেতে পারেন অথবা থাকতে চাইলে তালেবান কর্মকর্তাদের কাছে তাদের উপস্থিতি নিবন্ধন করাতে হবে ।
তালেবানের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহিন তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশের পরই এক ঘোষণায় পুরো আফগানিস্তানে ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেন । তিনি বলেন, যারা আমাদের বিরুদ্ধে হামলায় সহযোগিতা করেছে ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের দরজা ওই সকল ব্যক্তিসহ সবার জন্য খোলা থাকবে ।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি ঘোষণা স্থানীয় টিভিতে প্রচারিত হয়েছে যাতে তিনি বলেছেন ‘শান্তিপূর্ণভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে’।
বার্তা সংস্থা এপি, একজন আফগান কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে তালেবান আলোচকরা এখন প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে যাচ্ছেন, এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে আফগান সরকারের কোন প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন তালেবানের সিনিয়র নেতা মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার।
তালেবান যোদ্ধারা যখন কাবুল শহরের প্রবেশপথগুলো দখলে নিচ্ছে ঠিক সে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হয়েছেন মার্কিন দূত জালমে খলিলজাদ এবং ন্যাটো জোটের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে।
এর আগে শনিবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক টিভি ভাষণে প্রেসিডেন্ট গানি বলেছিলেন, দেশ এখন গুরুতর বিপদের সম্মুখীন, তবে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে জোরদার করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তবে যতটুকু খবর পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে, কাবুল অভিমুখে তালেবান যোদ্ধাদের অগ্রাভিযানে তেমন কোন বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি বললেই চলে।
তালেবান যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কাবুলে আফগান প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ দখলে নেয়ার দাবী করা হয়েছে। এর পূর্বে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি দেশ ছেড়ে তাজিকিস্তান চলে গেছেন বলে চলে যান বলে কিছু রিপোর্টে বলা হয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে আসলে কি পরিস্থিতি তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
আফগানিস্তান থেকে বিদেশী সৈন্যদের বিদায় ঘোষণার দেড় মাসেরও কম সময়ের ঝটিকা অভিযানে তালেবান যোদ্দারা প্রায় পুরো দেশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করলো ।
infographics cartoon character about migraine signs and treatment
মাথাব্যথার কারণে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন প্রভাবিত হয়। বর্তমানে দৌড়ঝাপের জীবনে আট থেকে আশি মাথা ব্যথা সকলেরই হয়ে থাকে। এই ব্যথাই মাঝে মাঝে অসহনীয় হয়ে ওঠে। এমনই এক মাথা ব্যথার সমস্যা হল মাইগ্রেনের সমস্যা।
মাইগ্রেন কী? What is Migraine in Bangla!
মাইগ্রেন হলে মাথার অর্ধেক অংশ ব্যথা করে। এই ব্যথা মাঝে মাঝে হয় আবার নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সময় পুরো মাথা ব্যথা করতে শুরু করে। কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েকদিন পর্যন্ত এই ব্যথা থাকে। এটি একটি নিউরোলজিক্যাল সমস্যা। এতে মাথা ব্যথার পাশাপাশি অনেকের বমি বা সর্দির সমস্যা হতে শুরু করে। তবে সমস্ত মাথা ব্যথা মাইগ্রেন হয় না।
মাইগ্রেন কত প্রকারের হতে পারে? Migraine Types in Bangla!
দু ধরণের মাইগ্রেন হয়— ক্লাসিকাল মাইগ্রেন ও নন ক্লাসিকাল মাইগ্রেন। ক্লাসিকাল মাইগ্রেন হলে ব্যক্তির মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। নন ক্লাসিকাল মাইগ্রেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর তীব্র মাথা ব্যথা হয়। তবে এর অন্য কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। মাইগ্রেনের ব্যথা হলে নিজের ইচ্ছানুযায়ী কোনও ওষুধ খাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মাইগ্রেন এর লক্ষণ ! Symptoms of Migraine in Bangla
মাথাব্যথা শুরু হলে তা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাথাব্যথা, বমি ভাব এ রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তিবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ মাথাব্যথা শুরুর আগেও হতে পারে। মাথার যেকোনো অংশ থেকে এ ব্যথা শুরু হয়। পরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে | চোখের পেছনে ব্যথার অনুভূতি তৈরি হতে পারে। শব্দ ও আলো ভালো লাগে না। কখনো কখনো অতিরিক্ত শব্দ ও আলোয় ব্যথা বেড়ে যেতে পারে|
Some symptoms of Migraine:
food cravings
depression
fatigue or low energy
frequent yawning
hyperactivity
irritability
neck stiffness
মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে যেসব খাবার Some || Foods That Trigger Migraine Headaches in Bangla
ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার। যেমন ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক।
বিভিন্ন ফল, বিশেষ করে খেজুর ও ডুমুর ব্যথা উপশম করে।
সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খেলে উপকার হয়।
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তিল, আটা ও বিট ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে।
“সৌম্য সরকার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একজন প্রতিভাবান ওপেনার। মারমূখী ব্যাটসম্যান হিসেবে যার খ্যাতি রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে যত বামহাতি ব্যাটসম্যান আছেন, তন্মধ্যে সৌম্য সরকার সবথেকে ক্লাসিক্যাল ব্যাটসম্যান। সৌম্য সরকার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান। বিশ্বক্রিকেটে তার আবির্ভাব ক্রিকেট পাগল বাঙালি জাতির মনে একজন হার্ডহিটার হিসেবে আশার সঞ্চার করেছে। অভিষেকের পর থেকেই তিনি দলের একজন নিয়মিত সদস্য।
এই বাঁহাতি অলরাউন্ডারের টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায় ২০১৫ সালের ২৮শে এপ্রিল । ওই ম্যাচে তিনি প্রথম এবং দ্বিতীয় উভয় ইনিংসেই কাকতলীয় ভাবে ৩৩ রান করে একটা দারুন ক্যারিয়ারের ইঙ্গিত দেন। তার টেস্ট ক্যাপ নং- ৭৬। তিনি সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ২০১৯ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর। ওই ম্যাচে তিনি প্রথম ইনিংসে ১৭ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫ রান করেন। বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরে যায়। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান “পেরিস্কোপ” শটের জন্য বিখ্যাত। তিনি একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে লিস্ট-এ ক্রিকেটে দ্বিশতক করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। উল্লেখ্য যে, তিনি অনুর্ধ-১৯ ওয়ানডেতেও দ্বিশতক হাকিয়েছিলেন। বাইশগজে দর্শনীয় শটের পাশপাশি দৃষ্টিনন্দন ফিল্ডিংয়ের জন্য বিখ্যাত তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সৌম্য সরকার সর্বমোট শতক হাকিয়েছেন ৩টি। তিনি ওয়ানডে ক্রিকেটে শতক হাকিয়েছেন ২ টি।প্রথম শতক- সৌম্য সরকারের প্রথম আন্তর্জাতিক শতক আসে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ২০১৫ সালের ২২শে এপ্রিল নিজের ১০ম ম্যাচে। ওই ম্যাচে তিনি ১১০ বলে ৬টি ছক্কা এবং ১৩টি চারের মাধ্যমে ১২৭ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। ফলে তিনি ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। ওটি ছিল সিরিজের শেষ ওয়ানডে। ম্যাচটি জিতে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে “বাংলাওয়াশ” করে ।
সৌম্য সরকারের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শতক আসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৮ সালের ২৫ শে অক্টোবর চট্টগ্রামে, নিজের ৩৫তম ম্যাচে। ওই ম্যাচে তিনি ১১৭ রান করে দলকে জয়ের পথে নেয়ার পাশাপাশি ম্যাচসেরার পুরস্কার লাভ করেন। তৃতীয় শতক- সৌম্য সরকারের তৃতীয় আন্তর্জাতিক শতক আসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৯ সালে স্যাডন পার্কে। ওটি ছিল তার প্রথম এবং একমাত্র টেস্ট শতক। ওই ম্যাচে তিনি ১৪৯ রান করেন । যদিও বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরে যায়। সৌম্য সরকার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এক অতি পরিচিত মুখ। তিনি দলের একজন নিয়মিত সদস্য। ইতিপূর্বে সৌম্য সরকার তার ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে বারবার সমর্থকদের মন জয় করেছেন। ২০১৫ সালে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের নেপথ্যের নায়ক ছিলেন তিনি। ওই সিরিজে ম্যান অফ দ্যা সিরিজ নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়াও ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে ৮৬ রান করে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট অর্ধশতক তুলে নেন। ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫১ রান করে নিজের ওয়ানডে এবং আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক পূরণ করেন। সৌম্য সরকার দলে আসায় টপঅর্ডারে স্বস্তি পেয়েছে বাংলাদেশ দল। আশা করি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হয়ে অনেকদিন খেলে যাবেন সৌম্য সরকার।
তামিম ইকবাল খান, বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের বর্তমান অধিনায়ক। সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা অধিনায়কত্ব থেকে অবসর নেয়ায় ২০২০ সালের ৮ই মার্চ তিনি এই দায়িত্ব পান। যদিও সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফরে তিনি তিন ম্যাচ অধিনায়কের ভূমিকা পালন করেন। তিনি আগেও অনেকবার সহ-অধিনায়কের ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ওই সময় আয়োজিত ২০১১ বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসানের ডেপুটি ছিলেন। তামিম ইকবাল ১৯৮৯ সালের ২০ই মার্চ চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মাধ্যমে, ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, তার ওডিআই ক্যাপ নং- ৮৩। ওই ম্যাচে তিনি ৮ বলে ৫ রান করেন। ওই বছরেই তার টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। ২০০৭ সালের ১লা সেপ্টেম্বর কেনিয়ার বিপক্ষে নাইরোবিতে তার টি-টুয়েন্টি অভিষেক ঘটে, তার টি-টুয়েন্টি ক্যাপ নং-১৭ । ওই ম্যাচে তিনি ১২ বলে ২ চারের সাহায্যে ১১ রান করেন।
তামিম ইকবালের টেস্ট ক্রিকেটে পদার্পণ ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডুনেডিনে, তার টেস্ট ক্যাপ নং-৫০। ৪-৮ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়া ওই টেস্ট ম্যাচে তিনি প্রথম ইনিংসে ৮৮ বলে ৯ চারের সাহায্যে ৫৩ রানের একটি ঝলমলে ইনিংস খেলেন, এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১২ চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ১২৮ বলে ৮৪ রানের আরোএকটি ঝকঝকে ইনিংস খেলে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। তামিম ইকবাল শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০২০ সালের ৬ই মার্চ সিলেটে, যে ম্যাচে তিনি ১০৯ বলে ১২৮ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। তিনি সর্বশেষ আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি খেলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯ই মার্চ ২০২০ সালে মিরপুরে, ওই ম্যাচে তিনি ৩৩ বলে ৪১ রানের একটি ঝড়ো ইনিংস খেলেন। তিনি সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুরে, ২০২০ সালের২২-২৫ ফেব্রুয়ারি, ওই টেস্টে তিনি প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করে ৪১ রান করেন।
পাঁচফুট আট ইঞ্চির মাঝারী গড়নের এই হার্ডহিটার বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দশহজার রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন। বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন ফরম্যাটে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব অর্জন করেন তামিম ইকবাল। তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬০০০ রানের মাইলফলক অর্জন করেন। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে ১০০০ রানের মাইলফলক অর্জন করেন। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ৩০০০ ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫০০০ রান করেন। তিনি যেকোনো এক ভেন্যুতে করা শ্রীলংকান লিজেন্ড সনাথ জয়সূরিয়ার ( কলম্বোর আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম) করা ২৫১৪ রানের রেকর্ড ভেঙে এক ভেন্যুতে (মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম) সর্বোচ্চ রানের অধিকারী হিসেবে নিজের নাম লেখান। ২০১১ সালে তিনি দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে উইজডেন বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার নির্বাচিত হন। তামিম ইকবাল একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২০৭টি। যেখানে ২০৫ ইনিংস ব্যাটিং করে ১৩টি শতক আর ৪৭টি অর্ধশতকের মাধ্যমে ৩৬.৭৪ গড় এবং ৭৮.৬৮ স্ট্রাইক রেটে ৭২০২ রান সংগ্ৰহ করেন তিনি। তিনি এই রান করতে বল খেলেছেন ৯১৫৩টি, চার মেরেছেন ৭৮৩ টি এবং ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৯১ টি। ওয়ানডেতে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান ১৫৮ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০২০ সালে।
তিনি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ৬০ টি, যেখানে ১১৫ ইনিংস ব্যাটিং করে ৯টি শতক আর ২৭টি অর্ধশতকের মাধ্যমে ৩৮.৬৪ গড় এবং ৫৬.৪৮ স্ট্রাইক রেটের মাধ্যমে ৪৪০৫ রান করেন। এই রান করতে তিনি বল খেলেছেন ৭৭৯৮ টি, চার মেরেছেন ৫৫১ টি এবং ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৩৫ টি। টেস্ট ক্রিকেটে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান২০৬, যেটি তিনি ২০১৫তে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন, এটি তার ক্যারিয়ারের একমাত্র দ্বিশতক। এই বামহাতি আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ৭৮ টি, যেখানে ৭৮ ইনিংসে ব্যাটিং করে একটি শতক আর ৭টি অর্ধশতকের মাধ্যমে ২৪.০৮ গড় এবং ১১৬.৯৬ স্ট্রাইক রেটে ১৭৫৮ রান করেন। এই রান করতে তিনি বল খেলেছেন ১৫০৩ টি, চার মেরেছেন ১৮৮ টি এবং ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৪৫ টি। আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান ১০৩*, যেটি তিনি ২০১৬ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে করেন, যা আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে এখনো বাংলাদেশের একমাত্র শতক। তিনি ওয়ানডে,টেস্ট ও আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টিতে ক্যাচ ধরেছেন যথাক্রমে ৫৪, ১৭ ও ১৮ টি। তামিম ইকবাল টেস্ট ক্রিকেটে শতক হাঁকিয়েছেন ৯টি, যার প্রথমটি আসে ২০০৯ সালে ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে, যেটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ১১তম টেস্ট ম্যাচ, ওই ম্যাচে তিনি ১২৮ রান করে দলের জয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন এবং ম্যাচসেরার পুরস্কার লাভ করেন। তামিম ইকবালের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট শতক আসে তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে, তার ক্যারিয়ারের ১৪তম ম্যাচে, যে ম্যাচে তিনি ১৫১ রান করেও দলের হার এড়াতে পারেন নি। ঐবছরই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার ক্যারিয়ারের ১৮তম ম্যাচে “ক্রিকেটের মক্কা” খ্যাত লর্ডসে সেকেন্ড ইনিংসে অনবদ্য ১০৩ রান করে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নিজের নাম লিখেন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ঠিক তার পরের টেস্টের প্রথম ইনিংসে আবারো শতক তুলে নেন, এবার খেলেছিলেন ১০৮ রানের আরো একটি ঝলমলে ইনিংস। তারপর বছর চারেক ছিলেন শতকবিমুখ। ২০১৪ এবং২০১৫ সালে টানা তিন টেস্টে তুলে নেন শতক, প্রথম দুটি ছিলো ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ারের ৩৬ ও ৩৭তম টেস্টে। কাকতলীয় হলেও দুটো টেস্টেই তিনি ১০৯ রান করে আউট হন। পরের শতকটি আসে এর পরের বছর, তার ক্যারিয়ারের ৩৮তম টেস্টে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে, যেখানে তিনি সেকেন্ড ইনিংসে অনবদ্য ২০৬ রান করেন, যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম ও একমাত্র দ্বিশতক। ওই ইনিংসের ফলে বাংলাদেশ টেস্টটি ড্র করতে সক্ষম হয় এবং তিনি ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন।ওই টেস্টে তিনি ইমরুল কায়েসকে নিয়ে ৫৬ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে দেন, উদ্বোধনী জুটিতে তারা সংগ্ৰহ করেন ৩১২ রান, যার ফলে তারা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৯৬০ সালে কলিং কাউদ্রে এবং জিওফ পুলারের করা ২৯০ রানের রেকর্ড ভেঙে দিতে সক্ষম হন। তার পরবর্তী শতক আসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, তার ক্যারিয়ারের ৪৪তম টেস্টে, যে ম্যাচে তিনি ১০৪ রান করেন এবং ঐ টেস্ট বাংলাদেশ আড়াই দিনেই জিতে নেয়, যে জয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে এক মাইলফলক। তামিম ইকবাল তার ক্যারিয়ারের সর্বশেষ ও নবম টেস্ট শতক হাঁকান ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ঐ ম্যাচে তিনি ১২৬ রান সংগ্রহ করেন। পড়ে আসতে পারেনঃ বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার
তামিম ইকবালের ওডিআই শতক মোট ১৩ টি। তার প্রথম শতক আসে তার ক্যারিয়ারের ২৮তম ম্যাচে ২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে, ওই ম্যাচে তিনি ১২৯ রান করে দলের জয়ে ভূমিকা পালন করেন। তার দ্বিতীয় শতক আসে ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, ওটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ৬০তম ম্যাচ, ওই ম্যাচে তিনি ১৫৪ রান করে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং চার্লস কভেন্ট্রির সাথে যুগ্মভাবে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন। তার ওই রান ছিল ওডিআইতে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের করা তৎকালীন সর্বোচ্চ রান। তার তৃতীয় শতক আসে ক্যারিয়ারের ৭৪তম ওডিয়াইতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে২০১০ সালে, যে ম্যাচে তিনি ১২৫ রান করেও দলের পরাজয় রুখতে পারেননি। তার ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক আসে তার ১১৯তম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৩ সালে, যে ম্যাচে তিনি ১১২ রান করেন। তিনি তার ক্যারিয়ারের পঞ্চম এবং ষষ্ঠ শতক তুলে নেন পরপর দুই ম্যাচে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ সালে নিজের ১৪২ ও ১৪৩তম ম্যাচে তিনি যথাক্রমে ১৩২ ও ১১৬* রান করেন। উভয় ম্যাচেই বাংলাদেশ জয়লাভ করে, ওই সিরিজে প্রথমবারের মত পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ এবং তামিম ইকবাল সিরিজ সেরা নির্বাচিত হন। তিনি তার ক্যারিয়ারের সপ্তম শতক তুলে নেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে২০১৬ সালে তার ক্যারিয়ারের ১৫৬তম ম্যাচে, ঐ ম্যাচে তিনি ১১৮ রান করে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তামিম ইকবাল তার ক্যারিয়ারের অষ্টম শতক হাঁকান শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ঐ ম্যাচে তিনি ১২৭ রান করেন।
তিনি তার ক্যারিয়ারের নবম শতক হাঁকান ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ওই ম্যাচে তিনি ১২৮ রান করেন, যদিও ম্যাচটি বাংলাদেশ হেরে যায়। তিনি দশম শতক হাঁকান ২০১৮ সালে ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে, ঐ ম্যাচে তিনি ১৩০ রানে অপরাজিত থাকেন, যেটা বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে ধীরগতির শতক(১৪৬বল)।ঐ ইনিংসের সুবাদে তিনি ম্যাচসেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তামিম ইকবাল তার ক্যারিয়ারের ১১তম শতক তুলে নেন ঠিক তার একটি ম্যাচ পরেই, সিরিজের শেষ ম্যাচে তিনি ১০৩ রান করেন এবং আবারো ম্যাচসেরা হন। তামিম ইকবালের ১২তম শতক আসে ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে, ঐ ম্যাচে তিনি ১৫৮ রান করে পূর্বে করা নিজের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড নিজেই ভেঙে ফেলেন (রেকর্ডটি যদিও এক ম্যাচের বেশি স্থায়ী হয় নি, ঠিক তার পরের ম্যাচেই লিটন দাস ১৭৬ রান করে রেকর্ড ভেঙে দেন) । ঐ ম্যাচে তামিম ইকবাল ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন। তামিম ইকবালের ১৩তম শতক আসে ঠিক তার পরের ম্যাচেই, যেটি ছিল আবার তামিম ইকবালের খেলা সর্বশেষ ওডিআই ম্যাচ। ওই ম্যাচে তিনি ১২৮ রান করেন।
তামিম ইকবালের একমাত্র আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি শতক আসে ২০১৬ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে, ওই ম্যাচে তিনি ১০৩ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচসেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। যেটা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একমাত্র টি-টুয়েন্টি শতক। তামিম ইকবাল বর্তমানে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে ২৪তম, টেস্টে ২৭তম এবং টি-টুয়েন্টিতে ৫০ তম স্থানে অবস্থান করছেন। তামিম ইকবাল ক্রিকেট বিশ্বে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, পরিচিত মুখ।তিনি তার ক্যারিয়ারের ভালো সময় যেমন দেখেছেন, খারাপ সময়ও দেখেছেন। দুসময়কে পিছনে ফেলে প্রতিবার ফেরত এসেছেন বীরের বেশে। ২০০৭ বিশ্বকাপে জহির খানকে ডাউন দ্যা উইকেটে এসে মারা ছক্কা কে বা ভুলতে পারে? কিংবা ২০১২ এশিয়া কাপে পরপর চারটি অর্ধশতক, যা বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় রেকর্ড। ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম ইকবালের ৯৫ রান বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের ভীত গড়ে দিয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার ৯৫ রান আমাদের মান বাঁচিয়েছে। যখনই দলের প্রয়োজন হয়েছে তখনই ব্যাটকে তরবারি বানিয়ে নিজে দাড়িয়ে গিয়েছেন ঢাল হয়ে, কখনো পেরেছেন কখনো পারেননি, তবুও বাংলাদেশ ক্রিকেটে তামিম ইকবাল এক গৌরবময় ইতিহাস। দেশসেরা ওপেনার থেকে বিশ্বসেরা হওয়া সময়ের ব্যাপার, অপেক্ষা শুধুই সময়ের। আশা করব প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওডিআইতে দশহাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন
গত ১০ই মে ২০২১ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাধারণ ছুটি বাড়ানোর নির্দেশনায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পরের হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে-
১. ‘স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামাত আদায়’ নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইসলামী শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামাত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিজনিত কারণে মুসল্লিদের জীবনের ঝুঁকি বিবেচনা করে এই বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে নিকটস্থ মসজিদে জামাত আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
২. ঈদের নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। ঈদের জামাতে মুসল্লিরা নিজ নিজ জায়নামাজ নিয়ে আসবেন, মসজিদে কোন কার্পেট বিছানো যাবেনা।
৩. প্রত্যেকে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে আসতে হবে এবং অজু করার সময় মিনিমাম ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত পরিস্কার করতে হবে। মসজিদে প্রবেশদ্বার এবং ওজুর স্থানেও হাত জীবাণুমুক্ত করতে সাবান অথবা হ্যান্ড-স্যানিটাইজারের ব্যাবস্থা রাখতে হবে।
৪. ঈদের জামাতে আগত সকল মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে মসজিদে আসতে হবে এবং মসজিদে সংরক্ষিত টুপি ও জায়নামাজ ব্যবহার করা যাবে না।
৫. ঈদের জামাত আদায়ের সময় কাতার করার ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কাতার করতে হবে। এক কাতার করার পর মাঝখানে এক কাতার পরিমাণ খালি রেখে পরের কাতার করতে হবে।
৬. শিশু, বৃদ্ধ এবং কোনো অসুস্থ ব্যক্তি কিংবা অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
৭. সর্বসাধারণের সুরক্ষায়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
৮. করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করতে মসজিদে ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
৯. করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করেছে সরকার।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।
এসব নির্দেশনা লঙ্ঘন হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ঈদের নামাজ আদায়ের এসব নির্দেশনা সব বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, সব রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে পাঠানো হয়েছে।
রমজান মাস হচ্ছে রহমতের মাস। একটানা সারাদিন রোজা রেখে আমরা সবাই মোটামুটি ক্লান্ত হয়ে পড়ি। তাই এই রমজান মাসে সুস্থ থাকতে কিছু স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চলা উচিত যা আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করবে।
১. সেহেরীতে স্বাস্থ্যকর খাবার
সেহেরী দিয়ে রোজার শুরু হয়। তাই সেহেরীর খাবার যথেষ্ট পুষ্টিমান সমৃদ্ধ হতে হবে। সেহরির আদর্শ কিছু খাবারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ফলমূল, শাকসবজি, কম চর্বিযুক্ত মাংস, মাছ,ভাত বা রুটি,দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার,ডিম ইত্যাদি। সেহরির সময় কয়েকটি খেজুর খেতে পারলে সারাদিনের মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরানোর মতো সমস্যাগুলো এড়ানো সম্ভব।
২. ইফতারীতে স্বাস্থ্যকর খাবার
সারাদিন রোজা রাখার পরে ভাজা-পোড়া ও তৈলাক্ত খাদ্য পরিহার করা উচিৎ। ইফতার শুরু করতে পারেন পানি, শরবত, স্যুপ, খেজুর, সালাদ এবং বিভিন্ন রকম ফলমূল দিয়ে। এরপরে আপনি আপনার পছন্দের ইফতারী আইটেম পরিমাণমত গ্রহণ করুন। স্যুপ আপনার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাবার হতে পারে যা আপনার শরীরের ভিটামিন, মিনারেল ও পানির চাহিদা পূরণ করবে। এছাড়া ভাজি ছোলার পরিবর্তে সেদ্ধ ছোলা, টমেটো, ধনেপাতা ও সরিষার তেল একসাথে মাখিয়ে খাওয়া যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর, খেতেও খুব একটা মন্দ লাগবে না।
৩. চিনিযুক্ত খাবার পরিহার করুন
রমজানে সুস্থ থাকতে চা, কফি, ফুডিং, কোমল পানীয়, মিষ্টিসহ সকল প্রকার চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবার শরীরের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে। তাই রমজানে অথবা রমজানের পরে সবসময়ই মিষ্টি জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিৎ।
৪. ধীরে ধীরে খবার গ্রহণ করা
আমরা অনেক সময় সারাদিন রোজা রাখার পরে দ্রুত ক্ষুধা নিবারণের জন্য সামনে যা পাই তাই খেতে থাকি। এটা করা ঠিক না, কারণ সারাদিন রোজা রাখার পরে হঠাৎ করে দ্রুত খেতে গেলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং সময় নিয়ে চিবিয়ে খাবার খেতে হবে। তাহলে আপনার হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে।
৫. প্রচুর পানি পান করুন
রমজানে সুস্থ থাকতে হলে ইফতারের সময় থেকে সেহরি পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাদ্য গ্রহণ করুন। ইফতারের পর থেকে সেরেহী পর্যন্ত কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করুন। তবে চা এবং কফি এড়িয়ে চলতে হবে, কারণ এগুলো শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি করে।
সুস্থ থাকুন ৯ টি উপায়ে
৬. হালকা ব্যায়াম করুন অথবা হাটুন
রমজানে সুস্থ থাকতে চাইলে প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন অথবা ইফতারের পরে অন্তত ২০ মিনিট হাটুন। সারাদিন ঘুমিয়ে না থেকে ঘরের কাজে সহযোগিতা করুন। নিয়মিত নামাজ আদায় করুন, এটিও আপনার শরীরচর্চার কাজ করবে।
৭. অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না
সারাদিন রোজা রেখে অনেকে ওজন কমে যাবে মনে করে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে থাকেন যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অনেক সময় সারাদিন ইফতারের পরে বেশী খেলে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, ইফতারে তাড়াহুড়া না করে খেজুর, পানি, শরবত, সালাদ এবং ফলমূল দিয়ে ইফতার শুরু করুন। বাকি খাবার মাগরিবের নামাজ আদায় করে এসে খান। এতে আপনার হজমক্রিয়া যথাযথ হবে।
৮. পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে
রমজান মাসে সাধারণত আমাদের দৈনন্দিন রুটিন পরিবর্তন হয়ে যায়। তাই এই সময়ে পর্যাপ্ত ঘুমানো জরুরী। অনেকে রাতে জেগে থেকে সারাদিন ঘুমায়। এটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। হুট করে এইরকম অভ্যাস পরিবর্তন হিতে বিপরীত হতে পারে। সুতরাং রাতের একটা সময় অবশ্যই ঘুমান এবং বাকিটা দিনে।
৯. ধূমপান পরিহার করুন
রমজান মাস ধূমপান পতিত্যাগ করার একটি সুবর্ণ সুযোগ। রোজা শুরু হওয়ার সাত দিন আগে থেকে একটু একটু করে ধূমপান কমিয়ে দিন। পুরো রমজান মাস নিজেকে ধূমপানমুক্ত রাখতে চেষ্টা করুন। এতে ধূমপানের অভ্যাস পরিত্যাগ সহজ হবে, সাথে সাথে রমজানেও সুস্থতা বজায় রাখতে পারবেন।
উচ্চস্বরে পশ্চিম পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত গাওয়া শুরু করল মজিদ মাস্টার –“ পাক সার জামীন শাদ বাদ, কিশ্বারে হাসীন শাদ বাদ…..”। মজিদ মাস্টার কোন ভুল করেনি।পাঞ্জাবি,পায়জামা পরেই এসেছে। মাথায় বেধে নিয়েছে পাকিস্তানের পতাকা।সে দাঁড়িয়ে আছে সোনাপুর হাইস্কুলের মাঠে। স্কুলটিকে পাকিস্তানি মিলিটারি ক্যাম্প করা হয়েছে। মজিদ মাস্টার একা আসেনি। তার সাথে আনা হয়েছে বড় মসজিদের ইমাম আকবর মিয়াকে। সামনে একটা চেয়ারে বসে আছে মেজর লিয়াকত খান। মেজর সাহেব মজিদ মাস্টারের দিকে তাকিয়ে বললেন-“ পাকিস্তান জিন্দাবাদ বোলো”। এর আগেও বেশ কয়েকবার তাকে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলতে হয়েছে।মজিদ মাস্টার আবারও বলল।এবারে অনেক জোরে। সে শরীরের সব শক্তি ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলায় খরচ করে ফেলল। সে এত জোরে বলবে মেজর সাহেব অনুমান করতে পারেননি। তিনি দুহাতে কান চেপে ধরলেন।তারপর হাসিমুখে বললেন-“ বহুত আচ্ছা। তুম আসলি পাকিস্তানি ”
মেজর লিয়াকত তাদেরকে যথেষ্ট সম্মান করলেন। চা-নাশতার ব্যাবস্থা করলেন। একজন সামান্য স্কুল শিক্ষক হয়ে এতটা সম্মান পাবে মজিদ আশা করেনি।তাছাড়া তার বয়সও বেশি না।সবেমাত্র স্কুলে জয়েন করেছে। তার বয়সী যুবক দেখলেই নাকি পাকিস্তানি মিলিটারিরা গুলি করে মেরে ফেলে।মজিদ দেখলো সবই ভুল ধারণা। মজিদ মাস্টারের কোন ভাবেই মনে হচ্ছে না তাকে মেরে ফেলার জন্য ডাকা হয়েছে। পাকিস্তানি মিলিটারি সমন্ধে মানুষ যা বলে সবই তাহলে গুজব ছাড়া কিছু না। পাকিস্তানি মিলিটারিকে নাকি বনের বাঘও ভয় পায়। মেজর লিয়াকত সাহেব কে দেখে মনে হচ্ছে না তাকে দেখে কোন বাঘ ভয় পাবে।অমায়িক ব্যাবহার লোকটির। মজিদ মাস্টার, ইমাম সাহেব এবং মেজর লিয়াকত তিনজন সময় নিয়ে গল্প করে।দেশ নিয়ে কথা বলে। স্কুলের সামনে খেলার মাঠ। তারও পরে ফসলি জমি। সেখানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।ধান সবে মাত্র পাক ধরেছে।মেজরের নির্দেশে সেখানে লোকজন নিয়ে আগুন লাগাচ্ছে জালাল চেয়ারম্যানের লোকজন। তারা বেশ আনন্দ নিয়েই কাজটা করছেন এটা বোঝা যাচ্ছে। একটা বেপার মজিদ মাস্টারের মাথায় ঢুকছে না। দোষ করলে করেছেন শেখ সাব। মাঠের ফসল তো দোষ করে নাই। এরা ধান ক্ষেতে আগুন দিচ্ছে কেন?
মেজর সাহেব উর্দুতে বললেন -“ এই গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আছে?” মজিদ মাস্টার উর্দু কিছু কিছু বুঝতে পারে। কিন্তু বলতে পারে না। জবাব দেয় ইমাম আকবর মিয়া। ইমাম সাহেব বললেন-“ জী না স্যার।খোদার মেহেরবানি, এই গ্রামে কোন কাফের নাই।আমরা যারা আছি সবাই পাক্কা মুসলমান। সবাই পাকিস্তানের গোলাম। পাকিস্তানকে মুহাব্বাত করি।” এত টুকু বলে ইমাম সাহেব আবারও গলা ছেড়ে‘ পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বললেন।সাথে যোগ দিল মজিদ মাস্টারও। মেজর লিয়াকত বললেন-“এত ঘন ঘন ‘ পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলতে হবে না।আমরা খুব বেশি ভালো পজিশনে নেই।ইতোমধ্যে কয়েকটা জেলা মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে গেছে।আমাদের সম্ভবতঃপিছু হটতে হবে।” ইমাম সাহেব বললেন-“একদমই চিন্তা করবেন না স্যার।দরকার হলে খোদা তালা আসমান থেকে নুরের ফেরেস্তা নামায়া দিবেন। ফেরেস্তারা ঐ কাফের মুক্তিদের বিপক্ষে যুদ্ধে নামবে। পাকিস্তানের জয় ঠেকানোর মত কেউ নাই।” নিজের কথায় নিজেই খুশি হন ইমাম সাহেব। কথা শেষ করার পরও দীর্ঘসময় তিনি হাসি ধরে রাখেন মুখে।মেজর সাহেব বললেন-“ আপনি পাকিস্তান কে অনেক পিয়ার করেন? -“ জী স্যার। মেরা পিয়ারা পাকিস্তান।”
-“ মৌলুভি, আমরা খবর পেয়েছি আপনি হিন্দু লোকদের লুঙ্গি,পাঞ্জাবি পরিয়ে মুসলমান সাজিয়ে রেখেছেন। নিজের ছেলেকে মুক্তিযোদ্ধাদের দলে দিয়ে দিয়েছেন।মসজিদের ভেতর হিন্দু মেয়েদের লুকিয়ে রাখেন।এসব কি সত্যি?” ইমাম সাহেবের মুখের হাসি মিলিয়ে যায় সাথে সাথেই। হাসির বদলে সেখানে নেমে আসে ভয়। স্বাধারণ কোন ভয় নয়। এই ভয় অন্যরকম। এসব খবর এরা কীভাবে জানলো।সব তিনি করেন গোপনে।কারও জানার কথা না।তিনি মুখে কিছুই বলতে পারেন না।মনে মনে দোয়া কালাম পড়তে শুরু করেন। মেজর লিয়াকত আচমকা আকবর মিয়াকে কষে চড় লাগালেন।ইমাম সাহেবের বয়স ষাটের উপর।শক্ত হাতের চড় তিনি নিতে পারলেন না। চেয়ার সহ নিচে পরে গেলেন। মেজর সহজ ভঙিতে গুলি করেন ইমাম সাহেবকে। মজিদ মাস্টার এই ঘটনা সহ্য করতে পারে না। বমি করে সামনের টেবিল ভাসিয়ে দেয়।এই প্রথম বার তার মনে হয় পাকিস্তানি মিলিটারি সমন্ধে তিনি যা শুনেছেন তার কিছুই মিথ্যে না।মাথা ঘুরে নিচে পরে যায় মজিদ।
মজিদ মাস্টারকে উঠতে সাহায্য করে রাজাকার জালাল। জালাল অশুদ্ধ ঊর্দুতে বলে -“ স্যার দেরি করে লাভ নাই। এখন ভর দুপুর। চলেন দুপুরের খানা আমরা মজিদ মাস্টারের বাসায় গিয়ে খাই। মজিদ মাস্টারের ঘরে নতুন বউ।তার বউয়ের পাক ভালো।” মজিদ মাস্টারকে ওরা মেরে ফেলে না। স্কুলের উঠোনে মস্ত বড় এক আম গাছ। আম গাছের গোড়ায় বড় বড় কালো পিপড়ার বাসা। স্থানীয় ভাষায় এগুলো কে বলে ‘ডাইয়া’। মেজরের চোখ পরে ঐ গাছের দিকে। মজিদ মাস্টারকে ওই আম গাছের সাথে বেঁধে রেখে ওরা রওনা হয় মজিদ মাস্টারের বাড়ির পথে। বাড়িতে অপেক্ষা করছে হেনা।নতুন বিয়ে হয়েছে বলে সারাক্ষণ মজিদের প্রতি একটা আকর্ষণ কাজ করে হেনার মনে।কিছুক্ষণ পর পরই মানুষটাকে দেখতে ইচ্ছা করে। দুপুর হলেই সে গোসল সেরে চোখে কাজল দেয়।খোপায় একটা জবা গেথে নিয়ে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।জালাল রাজাকার হয়তো সুন্দর করে দরজায় কড়া নাড়বে।হেনা দ্রুত দরজা খুলে দিবে। সে দরজা খুলে মজিদ মাস্টারকে দেখতে পাবে না। দিনের আলোতেও দেখতে পাবে পৃথিবীর জমাট বাধা অন্ধকার। মজিদ মাস্টারের সারা শরীরে ডাইয়া কামড়াতে শুরু করে। এই পিপড়া একবার কামড় বসালে সেই ব্যাথা কমে আসতে ঘন্টা খানিক সময় নেয়।মজিদ মাস্টারের সারা গায়ে অসংখ্য ডাইয়া কামড়াতে শুরু করে। তবু কাঁদতে ভুলে যায় মজিদ মাস্টার।
পরিশিষ্ট-২০১৫ সাল।টিভির সামনে বসে আছে এশা।একটু পরই বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট খেলা শুরু হবে। এশা ওর দাদুকে ডাক দেয়-“ দাদু এসো, খেলা শুরু হবে এখনই।দাদু ধীর পায়ে টিভির সামনে এসে বসেন। তিনি ক্রিকেট বোঝেন না। তবু খেলা শুরু হওয়ার ঠিক মুহুর্তে আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকেন।টিভি থেকে তার ঘোলা দৃষ্টি সড়ে না। লাল-সবুজের এক টুকরো পতাকা সামনে রেখে মাশরাফিরা লাইন ধরে দাঁড়ায়। শুরু হয় জাতীয় সংগীত। মজিদ মাস্টারের দাঁড়াতে কষ্ট হয়, এশা তাকে দাঁড়াতে সাহায্য করে। মজিদ মাস্টার ডান হাতটা বুকের বাম পাশে রেখে জাতীয় সংগীত শোনেন। এশা বুঝতে পারে না জাতীয় সংগীত শোনার সময় ওর দাদু এভাবে কাঁদে কেন!
চা খেতে কম বেশী আমরা সবাই ভালোবাসি। প্রিয়জন অথবা পরিবারের সবাইকে নিয়ে জম্পেস আড্ডাতেও চায়ের বিকল্প নেই। তাহলে, জেনে নেয়া যাক খুব সহজে মজাদার মালাই চা তৈরির প্রক্রিয়া।
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
(দুই জনের জন্য)
১. দুধ ৩ কাপ
২. চা পাতা ৪ টেবিল চামচ
৩. চিনি (ইচ্ছামত)
৪. ডিমের কুসুম ১ টির অর্ধেক
৫. বাটার বিস্কুটের গুঁড়া
৬. দুধের সর বা মালাই (ইচ্ছামত)
৭. জাফরান দানা সামান্য।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
১. দুধের মধ্যে ডিমের কুসুম অথবা বিস্কুটের গুঁড়া ভালো করে মিশিয়ে চুলায় বসিয়ে জ্বাল দিতে হবে।
২. বেশ ভালো করে জ্বাল হলে এবার চা পাতা, পরিমাণমতো চিনি আর জাফরান দিয়ে দিন।্রর
৩. এবার চা কাপে ঢালার আগেই প্রতিটি কাপে অল্প অল্প করে মালাই দিয়ে দিন।
৪. চায়ের কাপে ফেনা তুলতে চাইলে কাপে সরু করে চা ঢালুন। তাহলে চায়ের কাপের ওপর সুন্দর ফেনা তৈরী হবে
খুব সহজেই হয়ে গেল মজাদার মালাই চা। এবার পরিবারের সবাইকে পরিবেশন করুন।
সবজিগুলো আমরা যেভাবে ভাজি করি সেভাবে কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে।
রন্ধন প্রণালীঃ
পূর্বেই চাওমিন/নুডলস সিদ্ধ করে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে রাখতে হবে।
১. প্রথমেই ফ্রাই প্যান হালকা গরম করে নিতে হবে। পরিমাণমত সয়াবিন তেল দিয়ে গরম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
২. তেল কিছুটা গরম হয়ে আসার পরে ডিমের মিশ্রণ ফ্রাই প্যানে দিতে হবে। সাথে মুরগীর মাংস কুচি দিয়ে ভালমত নাড়িয়ে দিতে হবে যেন ডিম জমে না যায়।
৩. ডিমের মিশ্রণ হয়ে আসার পরে কেটে নেয়া সবজিগুলো (বাঁধাকপি, গাজর, চিচিঙ্গা) দিয়ে দিতে হবে। সবজীগুলো খাওয়ার উপযুক্ত হওয়া পর্যন্ত ভালোভাবে নাড়তে হবে। সবজীগুলো যেন ভাজি অথবা পুড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৪. সবজিগুলো হয়ে আসলে আসলে ফ্রাই প্যানে নুডলস ছেড়ে দিতে হবে, সাথে ফালি করে কাটা কাঁচা মরিচও। এরপর সয়া সস দিয়ে কিছুক্ষণ ভালোভাবে নাড়তে
হয়ে গেল মজাদার রেস্টুরেন্ট স্বাদের চাওমিন বা নুডলস রান্না। এবার সালাদ এবং পছন্দমত অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
টিপসঃ
১. এই রেসিপি দুইজনের জন্য প্রযোজ্য। দুইজনের বেশী হলে পরিমান আনুপাতিক হারে বাড়িয়ে নিতে হবে।
২. বাজারে সব সবজি সবসময় নাও পাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ফুলকপি, বরবটি এই জাতীয় যে সবজি পাওয়া যাবে পছন্দমত ব্যবহার করতে পারবেন। তবে বরবটির ক্ষেত্রে পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিতে হবে। কেউ সবজি বেশী পছন্দ করলে পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারবেন।
৩. চুলোতে উপকরণ দেয়ার পরে একটানা নাড়তে হবে, না হলে সবজি এবং অন্যান্য উপকরণ লালচে অথবা পুড়ে যেতে পারে।
৪. পুরো রান্না মিডিয়াম আঁচে করতে হবে।
৫. পানি ছাঁকার পরে সিদ্ধ নুডলস ঠাণ্ডা পানি ধুয়ে নিতে হবে, না হলে নুডলস একটির সাথে আরেকটি লেগে যেতে পারে।